গাংনীর কাথুলিবাসীর দুঃখ ধলার বিল। সুইস গেট হলেই এলাকাবাসীর দুঃখ মোচন।

জমিজিরাত থেকেও গাংনীর কাথুলি ও তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বাসীর অভাব পিছু ছাড়ছে না। অভাব অনটন আর দৈন্যতায় কুরেকুরে খাচ্ছে। ধলা বিলকে ইতোমধ্যে এলাকা...

জমিজিরাত থেকেও গাংনীর কাথুলি ও তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বাসীর অভাব পিছু ছাড়ছে না। অভাব অনটন আর দৈন্যতায় কুরেকুরে খাচ্ছে। ধলা বিলকে ইতোমধ্যে এলাকাবাসী অভিশপ্ত বলে আখ্যায়িত করেছে। মাত্র দু’টি স¬ুইস গেট হলেই এলাকাবাসীর দুঃখ মোচন করা সম্ভব বলে ধারণা করছেন কৃষকেরা।

সরজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, গাংনী শহর থেকে ১৬ কি.মি পশ্চিম উত্তরে ভারতীয় সীমানত্ম ঘেষা ইউনিয়ন কাথুলি ও তেঁতুলবাড়ীয়ার ঐতিহ্যবাহী বিল হিসেবে পরিচিত ধলার বিল। বিল ধলা গ্রামের জেএল-২ এর আওতায় ১০ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। পানি সংরক্ষণ ও নিস্কাসন ব্যবস্থা না থাকায় বিলটিতে মাত্র একটি ফসল উৎপন্ন হয়। আবার কখনও কখনও ভারত থেকে আসা পানির চাপে একেবারেই কোন ফসল উৎপন্ন হয় না। ফলে এলাকাবাসী আরও দরিদ্র হয়ে পড়ছে। বাড়ছে নানাবিধ সমস্যা।
রামকৃঞ্চপুর ধলা গ্রামের চাষি মামুনুর রশিদ জানান, এই বিলে তার ১৭ একর জমি রয়েছে। আমন ধান ছাড়া কোন ফসল আবাদ করতে পারেন না। কারণ হিসেবে তিনি জানান, অতি বর্ষায় বিলে পানি জমে থাকে বের হতে পারে না। অন্যদিকে ভারত থেকে পানি আসার ফলে বন্যার সৃষ্টি হয়ে সব ফসল নষ্ট হয়ে যায়।

একই কথা জানালেন লক্ষিনারায়নপুর ধলা গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ। তিনি জানান, পৈত্রিক সুত্রে এখানে তার ২০ একর জমি রয়েছে। যেখানে তিনটি ফসল হওয়ার কথা সেখানে গেল বছর একটি ফসলও পাননি। জমিতে এখনও পানি জমে আছে। ফলে বিভিন্ন এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে। তাছাড়া কেউ ওই জমি লিজ ও বর্গা নিতেও চায় না। যদিও জমি অত্যাধিক উর্বর।

রংমহল গ্রামের প্রভাবশালী ধান চাষী ইকরামুল হক †g¤^i জানান, তার এই বিলে ২৫ একর জমি রয়েছে। জমিতে এবার কোন ফসল হয়নি। পানি সংরক্ষণ ও নিস্কাসন ব্যবস্থা থাকলে জমিতে অনত্মঃনত্ম ৩টি ফসল হতো। প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোন ফসল হয় না। অন্যদিকে পানি জমে এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়। ঘরবাড়ি বিধ্বসত্ম হয়। চাষের জন্য খরচ করেও চাষিরা ফসল ঘরে তুলতে পারেনা। একারণে এলাকার মানুষ আরও দরিদ্য হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই পানির দরে জমি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আবার অনেকেই বড় ধরণের ঋণের জালে আটকে যাচ্ছে।

কাথুলি ইউপি চেয়ারম্যান কাবুল হোসেন জানান, এলাকাবাসীর দুঃখ হিসেবে পরিচিত এই ধলার বিলের পানি নিস্কাসনের জন্য ১৫ বছর আগে খাল খনন করে নওপাড়া গ্রামের মধ্যে কাজলা নদীতে সংযুক্ত করা হয়েছিল। সেসময় দু’িট ফসল আবাদ করা সম্ভব হয়েছিল। কালের বিবর্তনে খালটি সংস্কারের অভাবে পানি নিস্কাসন হয় না। বিভিন্ন সময়ে সরকারের কাছে খাল খননের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সাড়া মেলেনি। বর্তমানে খালের কোন অসিত্মত্ব না থাকা এবং ভারত থেকে বর্ষা মৌসুমে কাথুলি সীমানেত্মর ৩/এস b¤^i পিলারের পাশ দিয়ে পানি আসায় বিলটিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যদি ভারতের পানি প্রবেশের মুখে রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামে ও নওপাড়ার কাজলা নদীর মোহনায় দু’টি স¬ুইস গেট নির্মান করা হয় তাহলে বিলটি রক্ষা পাবে। একদিকে বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা থাকবে, অন্যদিকে শুস্ক মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করে বিপুল পরিমাণ ফসল উৎপন্ন করা সম্ভব হবে। তাহলে এলাকার মানুষের অভাব দুর হবে। এ বিষয়ে ২০০৬ সালে এলাকাবাসীর MY¯^vi করে খাল সংস্কার ও স¬ুইস গেটে নির্মানের দাবি তুলে গাংনী এলজিইডি অফিসের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অদ্যবধি কোন জবাব মেলেনি।

এ বিষয়ে গাংনী এলজিইডি’র প্রকৌশলী বদর উদ্দীন বলেন, ওই এলাকার জনগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সহ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে চলতি মাসে মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কয়েকটি স¬ুইস গেট নির্মানের জন্য প্রসত্মাবনা প্রেরণ করতে বলা হয়েছে। তার মধ্যে ধলার বিলের নবীনপুরের স¬ুইস গেটটির কথা উলে¬খ আছে। খুব শিঘ্রই স্থানীয় কমিটি গঠন করে প্রসত্মাবনা প্রেরণ করা হবে। আর ভারতীয় পানি প্রবেশের পথে স¬ুইস গেট নির্মানের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে আবারও জোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

Follow Us

গাংনী নিউজের পক্ষ থেকে সকল পাঠককে আন্তরিক শুভেচ্ছা । প্রিয় পাঠক, অত্যান্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, গাংনী নিউজ এখন থেকে ২৪ ঘন্টাই আপডেট করাহবে। আমাদের ঠিকানা-www.gangninews.com আমাদের সাইটে প্রবেশ করুন- এখানে ক্লিক করে এবং গাংনীর সব খবর সবার আগে জেনে নিন ধন্যবাদ।

Hot in week

Recent

Comments

ডাউনলোড করুন। ছবি দেখে ফন্টটি সেটাপ করুন এবং ফিক্স করুন।
item