টাকা না দেওয়ার জের ॥ গাংনীর মালসাদহে পাষন্ড ছেলের কান্ড ॥ পিতাকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা ।
মোস্তাফিজুর রহামন :- বাড়ি নির্মান করার জন্য টাকা না পেয়ে পাষন্ড পুত্র হাফিজুল ইসলাম পানিতে চুবিয়ে পিতা মোজাম্মেল হককে ...
মোস্তাফিজুর রহামন:- বাড়ি নির্মান করার জন্য টাকা না পেয়ে পাষন্ড পুত্র হাফিজুল ইসলাম পানিতে চুবিয়ে পিতা মোজাম্মেল হককে (৫৫) হত্যা করেছে। গতকাল রোববার দুপুরে গাংনী পৌরসভাধীন পশ্চিম মালসাদহ গ্রামে তার নিজ পুকুরে গোসল করার সময় পুত্রের হাতে এ নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদনেত্মর জন্য মেহেরপুর মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহতে অপর ছেলে কামাল হোসেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পলাতক রয়েছেন হাফিজুল।
নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের মৃত ছমির উদ্দীনের ছেলে মোজ্জামেল হকের ৪ছেলে ও ১মেয়ের মধ্যে হাফিজুল ইসলাম তৃতীয়। দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুর থেকে বাড়ি ফিরে এসে ওই গ্রামের জনৈক আব্দুল মালেকের মেয়েকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পরে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। বড় ছেলে প্রবাসী জামাল উদ্দীন কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরে পৃথক একটি দোতলা বাড়ি নির্মান করেন। বড় ভাই বাপের সম্পদ লুটে নিয়ে বাড়ি নির্মান করেছে অভিযোগ তুলে হাফিজুল বাড়ি নির্মান করার জন্য পিতার কাছে টাকা দাবি করেন। পিতা রাজি না হওয়ায় প্রায়ই তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডতা সহ ঘটত হাতাহাতি ঘটনা। যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে গত এক সপ্তাহ পুর্বে বাকবিতন্ডতার এক পর্যায়ে পিতা মোজাম্মেল হক লাঠি দিয়ে ছেলে হাফিজুলের মাথায় আঘাত করেন। হাফিজুল কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাড়ি এসে আবারও টাকার জন্য পিতাকে চাপ দিতে থাকে। সুযোগ খুঁজতে থাকে প্রতিশোধের। পরিবারের লোকজন হাফিজুলের হাত থেকে পিতাকে বাঁচাতে সব পদক্ষেপ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল দুপুরে পিতা বাড়ির অদুরে নিজ পুকুরে গোসল করতে গেলে সুযোগ বুঝে হাফিজুল পানিতে চুবিয়ে নৃশংসভাবে পিতাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। হত্যার পর দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখে প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলা তাকে সন্দেহ করেন। পরে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে মোজাম্মেলের লাশ দেখে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয় ওই মহিলারা। হাফিজুলের মাথায় সমস্যা আছে প্রচার করে লাশ উদ্ধারের পথমদিকে পারিবারিকভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে নিহতের মেঝ ছেলে কামাল থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদনেত্মর জন্য মেহেরপুর মর্গে প্রেরণ করেছে। পাষন্ড ছেলের প্রতি ঘৃনা আর নিন্দা জানিয়ে তার দৃষ্টানত্মমূলক শাসিত্ম দাবি করেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা ও এলাকাবাসী।
নিহতের পারিবারিক পরিচয়ঃ-
নিহত মোজাম্মেল হকের বড় ছেলে জামাল উদ্দীন দীর্ঘ দশ বছর ধরে সিঙ্গাপুর প্রবাসী। মেঝ ছেলে কামাল হোসেন চৌগাছা বড় মসজিদের ঈমামতি করেন আর ছোট ছেলে ফয়জুল পিতার সাথে কৃষি কাজ দেখাশুনা করতেন। একমাত্র মেয়ে জাহানারা বিবাহিত। হাফিজুলও দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুরে ছিলেন।