গাংনী হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা ও সংকটের মধ্যে চলছে আউটডোরে চিকিৎসা

গাংনী থেকে মোসত্মাফিজুর রহামন- নানা অব্যবস্থাপনা ও সংকটের মধ্যে চলছে গাংনী উপজেলা সাস্থ কমপ্লেক্সে সাস্থ সেবা। শুধু নেই, নেই, আর নেই। ওষুধ ন...

গাংনী থেকে মোসত্মাফিজুর রহামন- নানা অব্যবস্থাপনা ও সংকটের মধ্যে চলছে গাংনী উপজেলা সাস্থ কমপ্লেক্সে সাস্থ সেবা। শুধু নেই, নেই, আর নেই। ওষুধ নেই, নেই রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মত কোন পরিবেশ। হাসপাতালের উপর গরীব অসহায় মানুষের আস্থা থাকলেও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে তারা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরজমিনে হাসপাতাল ঘুরে জানা যায়, প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫শ রোগী আউটডোরে ভিড় করে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য। সর্দ্দি জ্বর থেকে শুরু করে জটিল রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন ডাক্তারা। আগের চেয়ে মানুষের মাঝে সাস্থ সচেতনতা, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সব সময় ডাক্তার প্রাপ্তি নিশ্চয়তার কারণে প্রতিদিনই হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে। সেই তুলনায় প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ না থাকা এবং হাসপাতাল ভবনের জীর্নদশার কারণে রোগীরা সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে দিয়েই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
হাসপাতালে আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা গাড়াডোব গ্রামের সালেহা জানান, জ্বরের চিকিৎসার জন্য সেই সকাল সাতটা থেকে লাইন দাড়িয়ে ১১টার সময় সিরিয়াল পেয়েছি। দু’রকম ওষুধ পেলেও আরও তিন রকম ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হবে।
গাংনীর শিলা বেগম জানালেন, ভিড়ের মধ্যে অনেক কষ্ট করে লাইন দিয়ে সিরিয়াল পেলাম। একটি কবুতরের ঘরের মত রুমে দেখি ২জন ডাক্তার বসে আছেন। রুমের মধ্যে দাঁড়ানের কোন জায়গা নেই। আবার পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছে তাড়াতাড়ি বের হওয়ার জন্য।
ফ্রি ওষুধ পাওয়া গেলেও তা নিতে খুবই কষ্ট বলে জানালেন আযান গ্রামের খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিনটি লাইন শেষ করে ভিড় ঠেলে ওষুধ কিছু পাওয়া গেলেও ডাক্তারের পরামর্শ পাওয়া যায় না। অনেক রোগির ভিড়ের কারনে ডাক্তার সাহেবরা কোন কিছু না দেখেই ওষুধ দিতে বাধ্য হন।
দেড় বছরের শিশু সনত্মান কোলে নিয়ে গোপালনগর গ্রামের গুলশানারা বেগম বসে ছিলেন হাসপাতারের বারান্দার এক কোণে। তিনি জানালেন, সকাল সাতটার সময় এসে ডা. নুরুন্নাহার বেগমের জন্য ১২টা পর্যনত্ম বসে আছি। অনেকক্ষন পর তার রুম খুললেও কর্ষক ভাষায় তার সহকারী বললেন উনি ওটিতে আছেন দুরে সরে যান, আসলে দেখা পাবেন।
বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের মুকুল হোসেন অত্যনত্ম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানালেন, কে বলেছে চিকিৎসা দেয়। তিনদিন আসলে একদিন পাওয়া যায় ডাক্তার ও ওষুধ। শুনতে হয় শুধু নেই আর নেই।
বামুন্দি গ্রামের সুফিয়া বেগম, তেরাইলের রওশনারা, কষবার রুহুল আমিন সহ অনেকেই অভিযোগ করে জানান, সকালে ঠিকমত ডাক্তার পাওয়া যায় না। আবার তাদের মধ্যে কেই ১০টায় আবার কেউ আসেন ১২টায়। দু’ঘন্টা ধরে ডাক্তারদের অপেক্ষায় অযথা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ডাক্তার কোথায় আছেন? কখন আসবেন? হাসপাতালের কারও কাছে জানতে চাইলে উল্টো ধমক দিয়ে “এত জেনে কি হবে” বলে শাসন করে। তাই অনিশ্চয়তার মধ্যেই দাড়িয়ে থেকে সকাল থেকে দুপুর হয়ে যায়।
গাংনী উপজেলা সাস্থকমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এইচ এম আনোয়ারুর ইসলাম আউটডোরে চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানান, প্রতি সপ্তাহে ২৮শ’ থেকে ৩হাজার রোগী দেখা হয়। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১টা পর্যনত্ম রোগী দেখা চলে। রোগীদের চাহিদার তুলনায় সরকারীভাবে ওষুধ সরবরাহ খুবই কম। যে পরিমাণ রোগী আসে তাতে চাহিদার চারভাগের একভাগ ওষুধ দেওয়া সম্ভব। অন্যদিকে পুরাতন ভবন। সল্প জায়গার কারণে রোগীদের বসার জায়গা তো দুরে থাক দাঁড়ানোর জায়গায় থাকে না। রোগীর ভিড়ে একঘরে দু’জন করে বসে চিকিৎসা দিতে হয়। ডাক্তারদের জন্য একজনও বয় নেই। তাই রোগীদের বিশৃংখলা লেগেই থাকে।

Follow Us

গাংনী নিউজের পক্ষ থেকে সকল পাঠককে আন্তরিক শুভেচ্ছা । প্রিয় পাঠক, অত্যান্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, গাংনী নিউজ এখন থেকে ২৪ ঘন্টাই আপডেট করাহবে। আমাদের ঠিকানা-www.gangninews.com আমাদের সাইটে প্রবেশ করুন- এখানে ক্লিক করে এবং গাংনীর সব খবর সবার আগে জেনে নিন ধন্যবাদ।

Hot in week

Recent

Comments

ডাউনলোড করুন। ছবি দেখে ফন্টটি সেটাপ করুন এবং ফিক্স করুন।
item